কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
কালোজিরা মানুষের কাছে অনেক উপকারী একটি ঔষধ হিসেবে পরিচিত। কালোজিরার ছোট ছোট কালো দানা গুলোর মাঝে মহান সৃষ্টিকর্তা এক বিশাল উপকারিতা গুণগত ক্ষমতা প্রদান করেছেন যা সত্যিই বিস্ময়কর। আদিকাল হতে শুরু করে আজ অবধি কালোজিরা মানুষের শরীরের নানান জটিল রোগের প্রতিরোধ ও প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, কালোজিরার বীজ এবং তেল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি এবং অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখে, শ্বাসকষ্ট ও এলার্জি উপশমে কার্যকর এবং ত্বক ও চুলের যত্নের সহায়ক। এছাড়াও নিয়মিত ব্যবহার হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (স:) বলেছেন,"তোমরা কালোজিরা নিয়মিত সেবন করবে, কেননা একমাত্র কালোজিরায় রয়েছে মৃত্যু ব্যতীত সকল রোগের মহৌষধি গুণ"। কালোজিরা রয়েছে অনিদ্রা , চুল পড়া, মাথা ব্যথা, মাথা ঝিমঝিম করা, মস্তিষ্ক শক্তি তথা স্মরণশক্তি বাড়ানো, মুখশ্রী ও সৌন্দর্য রক্ষা, অবসন্নতা-দুর্বলতা, অলসতা ও নিষ্ক্রিয়তা, খাবারের অরুচি সহ সকল প্রকার রোগের মহৌষধি গুনাগুন।
উপাদান:
কালোজিরা তে আছে ফসফেট, লৌহ ও ফসফরাস। এছাড়াও রয়েছে ক্যান্সার প্রতিরোধক কেরটিন, বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধকারী উপাদান এবং অম্ল রোগের প্রতিষেধক।
কালোজিরার পুষ্টিগুণ:
প্রায় শতাধিক পুষ্টি ও উপকারী উপাদানে ভরপুর কালোজিরা। নিয়মিত কালোজিরা খাদ্য হিসেবে খাওয়ার অভ্যাস করে তুললে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। ফলে সুস্বাস্থ্য রক্ষায় কালোজিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও কালোজিরায় ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ রয়েছে।
আরও পরুনঃ কোয়েল পাখির উপকারিতা ও অপকারিতা।
কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম:-
- আমরা দুই ভাবে কালোজিরা খেয়ে থাকি। প্রথমত কালোজিরার দ্বারা শুধু কাঁচা চিবিয়ে খায় এবং দ্বিতীয়টি হলো অন্য কোন কিছুর সাথে মিশিয়ে বা পিষিয়ে কালোজিরা খেয়ে থাকি। আবার বিভিন্ন জন কালোজিরা মধু, রসুন, পুদিনা-পাতা ,তুলসী-পাতা ইত্যাদির সাথে মিশিয়ে খায়। আর এইভাবে কালোজিরা খাওয়ার রয়েছে অনেক উপকারিতা।
- কালোজিরা খাওয়ার অন্য আরেকটি উপায় হলো কালোজিরা গুঁড়ো করে পেয়ারা পাতার রসের সাথে মিক্স করে খাওয়া। এলার্জি রোগী মানুষের জন্য কালোজিরা ও পেয়ারা পাতার রস অনেক উপকারী।
- চা বা গরম পানির সাথে মিশিয়ে পান করলে উপকার পাওয়া যায়।
- সরাসরি কালোজিরা তেল হিসেবেও খাওয়া যেতে পারে।
- মধু ও কালোজিরা মিশ্রিত করে খাওয়ার ও আরেকটি নিয়ম রয়েছে। কালোজিরা মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে সর্দি-কাশি অল্প হলেও নিরাময় হয়।
- তাছাড়া কালোজিরার তেল মধুর সাথে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। প্রতিদিন কয়েকবার এই কালোজিরা ও মধু একসাথে খেলে শরীরের জন্য খুবই উপকারী।
কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা:-
শরীরের সুস্থতা রক্ষা করতে কালোজিরা আদিকাল হতে আজ অবধি গুরুত্বপূর্ণ উপকারী ভূমিকা পালন করছে। বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণায় উঠে এসেছে যে, কালোজিরাতে প্রায় সকল প্রকার রোগের প্রতিকার ও প্রতিষেধক গুণ পাওয়া যায়।
রোগ প্রতিরোধে কালোজিরার উপকারিতা:-
ভেজাল মিশ্রিত খাদ্য-দ্রবাদী খাওয়ার ফলে মানুষ আজকাল নানান রকম জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো ভীষণ প্রয়োজনীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কালোজিরায় রয়েছে সকল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। প্রতিদিন কালোজিরা খাদ্যে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেড়ে যায় এবং দেহের সকল অঙ্গ প্রত্ঙ্গ সতেজ থাকে।
ত্বকের যত্ন:-
মানুষের শরীরের রোগ নিরাময়যোগ্য করার পাশাপাশি টকের যত্নে ও কালোজিরার তুলনা হয় না। কালোজিরাতে রয়েছে লেনোলেনিক এবং লিনোনেইক নামক এসেনশিয়াল ফ্যাটি অ্যাসিড জাতক কে ক্ষতিকর ইউভি রশ্মি থেকে রক্ষা করে । এর পাশাপাশি ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে তুলতে ১ চা-চামচ মধু , ১ চা-চামচ এলোভেরা জেল, ১ চা-চামচ কালোজিরা তেল, একসাথে মিশিয়ে প্রতিদিন ২ বার নিয়মিত ত্বকে মাসাজ করলে দ্রুত উজ্জ্বল হবে।
ব্রণের সমস্যার সমাধান:-
আপনার যদি ব্রণ সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে অন্য কিছু, এটা সেটা, ব্যবহার না করে কালোজিরার পেস্ট এর সাথে আপেল সাইডার ভিনেগার দিনে দুইবার ব্যবহার করতে পারেন। আর এটা ব্যবহারের ফলে ৭ দিনের মধ্যে পরিবর্তন লক্ষ্য করতে পারবেন।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ:-
বর্তমান সময়ে ডায়াবেটিস রোগের সংখ্যা অনেক। আর এ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে কালোজিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। ডায়াবেটিস রোগ নিরাময়ে অনেক কাজে লাগে কালোজিরা। কালোজিরা রক্তে উপস্থিত গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। তার জন্য ডায়াবেটিস রোগীদের পুনরায় ঔষুধ সেবনের দরকার হয়না এবং ডায়াবেটিস রোগীরা উপকার পেয়ে থাকেন।
স্মৃতিশক্তি বাড়ানো:-
আমাদের জীবন চলার পথে প্রতিনিয়ত নানা ধরনের কাজের চাপ ও ব্যস্ততার ফলে মানুষের ব্রেইন শক্তি একঘেয়ে হয়ে পড়ে এবং একটা সময় কম বেশি সবকিছুই মানুষ ভুলতে শুরু করে বা স্মরণ রাখতে পারে না। এমন সমস্যার সমাধান করতে পারে কালোজিরা। কালোজিরা একটি অ্যান্টিবায়োটিক বা অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে। মানুষের মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করার মাধ্যমে কালোজিরা স্মরণ শক্তি বাড়িয়ে তুলতে উপকারী ভূমিকা রাখে।
আরও পরুনঃ কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা ও অপকারিতা।
চুলপড়া রোধ:-
চুল পড়া এখনকার মানুষের একটি নিত্যদিনের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার চুল পড়া রোধে তৈরি হয়েছে নানা ধরনের উপায়ও। আর চুল পড়া রোধে সেগুলোর সবচেয়ে সহজ ও কার্যকরী সমাধান পাওয়া গেছে কালোজিরায়। সর্ব প্রথমে একটি মাঝারি আকারের লেবুর অর্ধেকটা কেটে লেবু রস বের করে নিতে হবে, তারপর লেবুর রসের ৩-৪ চামচ লবণ মিশিয়ে নিতে হবে ভালোভাবে। লেবুর রসের সাথে লবণ ভালোভাবে মেশানো হলে ওই রসের পুরোটা মাথায় লাগিয়ে ৩০ মিনিট সময় রেখে সম্পূর্ণ মাথা ধুয়ে ফেলতে হবে। এর ফলে চুলে মিশে থাকা সকল ময়লা জীবাণু ও খুশকি খুব সহজেই দূর হয়ে যাবে। এবার মাথার চুল ভালো করে শুকাতে হবে, চুল শুকানো হলে মাথায় কালোজিরার তেল লাগাতে হবে। আবার দুইদিন পরপর লেবুর রস এবং লবণ মিশিয়ে মাথা ধুয়ে কালোজিরা তেল লাগাতে হবে। এর ফলে ৩-৪ সপ্তাহের মধ্যেই মাথার চুল পড়া রোধ করা সম্ভব হবে।
ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ:-
প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দুটি বা তিনটি রসুন কোষ চিবিয়ে খেয়ে নিলে এবং সমস্ত দেহের মাঝে কালোজিরার তেল মালিশ করে সূর্য তাপে কমপক্ষে ৩০ মিনিট থাকতে পারলে এবং এক চা-চামচ কালোজিরা তেলের সাথে এক চা-চামচ পরিমাণ মধু মিশ্রিত করে প্রতি সপ্তাহে ২/৩ দিন খেলে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়। এভাবে প্রতিদিন খাওয়া সম্ভব না হলেও ২-১ দিন পর পরও খাওয়া যাবে, এতে করে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
মাথা ব্যথা কমায়:-
মাথা ব্যথা বর্তমান সময়ে অনেক জটিল সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এই মাথা ব্যথা সমস্য নিরসনের জন্য কালোজিরা উপকারিতা অনেক। আমরা কপালের দুই পাশে কালোজিরার তেল মালিশ পাঁচ মিনিট সময় ধরে করলে, এতে মাথা ব্যথা খুব সহজেই দূর হয়ে যাবে। তাছাড়াও মাথাব্যথা যাদের প্রতিদিনের সাথি তাদের জন্য ও দীর্ঘস্থায়ী ব্যবস্থা রয়েছে। কালোজিরা দিয়ে বড়ি বানিয়ে খেলে মাথা ব্যথার উপদ্রপ অনেক কমে যাবে এবং সাথে সাথেই এর ভালো সুফল পাওয়া যাবে।
হজমের সমস্যা দূর:-
এসিডিটি বা বদহজম আজকাল ঘরে ঘরে। আর এই এসিডিটির বা হজমের সমস্যা হলে আর এখন টাকা খরচ করে ঔষধ কিনতে হবে না। কালোজিরা মোটামুটি আমাদের সবার ঘরে ঘরেই থাকে। আর এই কালোজিরা আজ থেকে ব্লেন্ড করে রাখবেন। এসিডিটি বা হজম জনিত কোন সমস্যা দেখা দিলেই এক গ্লাস গরম দুধে ২-৩ চামচ কালোজিরা গুঁড়া মিশিয়ে পান করলে সাথে সাথে উপকার পাওয়া যাবে।
হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট রোগ নিয়ন্ত্রণ:-
শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি রোগীদের জন্য কালোজিরাকে অত্যাবশ্যকীয় উপাদান হিসেবে গণ্য করা হয়। কালোজিরা হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট সমস্যা দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা দূর করতে এক চা চামচ কালোজিরা তেলের সাথে একগ্লাস দুধ মিশ্রিত করে প্রতিদিন পান করতে হবে। তাছাড়াও নিয়মিত খাদ্যের তালিকায় কালোজিরা ভর্তা রাখলে হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট রোগ নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়।
কিডনি সমস্যার সমাধান:-
কিডনি জনিত যেকোনো রকমের রোগের প্রতিকারক উপাদান রয়েছে কালোজিরাতে। কিডনিতে পাথর হয়েছে দূর করতে ২ চামচ কালোজিরা গুড়ো এবং ২ চামচ মধু কুসুম গরম পানিতে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খেতে পারেন। এছাড়াও পাথর সরাতে অ্যাপেল সিডার ভিনেগারের অম্লীয় উপাদান সাহায্য করে। মধুতে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান যা কিডনির পাথর রোগের প্রতিরোধ করে। ১চা-চামচ ভিনেগার, ২ চা চামচ মধু, ২ চা-চামচ কালোজিরা তেল একসাথে মিশিয়ে টানা ৩০ দিন খেলে কিডনির পাথর অপসারণ হয়ে যায় । এর পাশাপাশি কিডনিসহ শরীরের সকল ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
চোখের সমস্যায় কালোজিরার ব্যবহার:-
চোখ ব্যথা, ঝাপসা দেখা, চোখ জ্বালাপোড়া সমস্যা দূর করতে কালোজিরা ব্যবহার করা হয়। চোখ ব্যথা হলে চোখের পাতা, ভ্রু-সহ, চোখের দুই পাশে কালোজিরা তেল মালিশ করতে হবে প্রতিদিন ঘুমানোর আগে। চোখে ঝাপসা লাগলে, গাজর ব্লেন্ড এর এক কাপ পরিমাণ গাজরের জুস নিতে হবে, এবং জুসের তিন চা চামচ কালোজিরা তেল মিশ্রিত করে খেতে হবে টানা ৩০ দিন সকালে বা ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে। চোখের জ্বালাপোড়া বেশি হলে দুই টুকরো গাজর, চার থেকে পাঁচ টুকরো শসা, এবং ৪ চা-চামচ কালোজিরা ব্লেন্ড করে নিতে হবে ও এর মিশ্রণের সাথে যোগ করতে হবে ২ চা-চামচ মধু। এভাবে কালোজিরা মিশ্রণ ঠিকমতো দিনে দুইবার খেলে চোখ জ্বালাপোড়া দূর হয়ে যাবে।
হাঁটু ও পিঠের ব্যথা নিরাময়:-
খাটুয়া পিঠের ব্যথা নিরাময়ে কালোজিরা অনেক উপকারক হিসেবে কাজ করে। যাদের বয়স ৫০ বা ৬০ এর বেশি অথবা এর একটু কম তাদের হাঁটু ব্যথা, পিঠে ব্যথা প্রায় প্রতিদিনের সাথী। এই সকল ব্যথা থেকে মুক্তি লাভে ব্যবহার করতে হবে কালোজিরা। ৩ টি মধ্যম সাইজের আদা এবং তিন থেকে চারটি মধ্যম সাইজের হলুদ পিষে নিয়ে , ১ চা চামচ সরিষার তেল, ২ চা চামচ নিম তেল এবং ২ চা চামচ কালোজিরা তেলের সাথে ১০-১৫ মিনিট গরম করতে হবে। এরপরে তেলটি ঠান্ডা করে নিয়ে বোতলে সংরক্ষণ করতে হবে। ব্যথার জায়গায় তেলটি মালিশ করলে সাথে সাথে ব্যথা কমে যাবে এবং প্রতিদিন ব্যবহার করলে দীর্ঘ সময়ের সব ব্যথা নিরাময় হবে।
সর্দি-জ্বর নিরাময়:-
২ চা চামচ কালোজিরা তেল লেবু চায়ের সাথে মিশ্রিত করে সকাল বিকাল খেলে সর্দি জ্বর দ্রুত কমে যায়। এছাড়াও ১০-১২ টি তুলসী পাতা ও ৩ কাপ পানিতে ৪ চা চামচ লেবুর রস, ২ চা চামচ কালোজিরা তেল এবং ১ চা চামচ মধু একসাথে ৫ মিনিট জ্বাল দিতে হবে । এটা নিয়ম করে সকাল বিকাল খেলে ৭ দিনের মধ্যে জ্বর ,সর্দি- কাশি ইত্যাদি নিরাময় হয়ে যাবে।
উচ্চ রক্তচাপ কমায়:-
কালোজিরা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে, তবে এটি কোন একক চিকিৎসা নয়। উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসায় কালোজিরা কে একটি পরিপূরক হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। নিয়মিত চা পানের সময় চায়ে কালোজিরা মেশানো বা কালোজিরা তেল ব্যবহার করার মাধ্যমে এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে।
ওজন কমাতে কালোজিরা উপকারিতা:-
যাদের ওজন বৃদ্ধি পাচ্ছে তারা ওজন কমাতে বা নিজেকে ফিট রাখতে চাইলে আপনাদের জন্য প্রথম কাজ হলো- ২ মধু ও দুই চা চামচ কালোজিরা তেল কুসুম গরম পানিতে মিক্স করে প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে পান করতে হবে। এর ফলে অতিরিক্ত ওজন কমে যাবে শারীরিকভাবে ফিট থাকবেন।
কালোজিরার সতর্কতা:-
কালোজিরা নিয়মিত ও পরিমিত খেতে হয়। অতিরিক্ত খুব বেশি খেলে বা ব্যবহার করলে হিতের বিপরীত হয়। কালোজিরার তেল গর্ভাবস্থায় গ্রহণ করা যাবে না। গর্ভাবস্থা অতিরিক্ত কালোজিরা খেলে গর্ভপাতের সম্ভাবনা থাকে। কালোজিরা গ্রহণ করার সবটাই করতে হবে পরিমিত পর্যায়ে। অনেকে কালোজিরা হজম করতে পারেন না। তবে আস্তে আস্তে অভ্যাস করলে ভালো। যারা সহজে কালোজিরা হজম করতে পারেন না তারা খাবেন না, যারা পারবেন তারাই নিয়মিত পরিমিত খাবেন। গর্ভাবস্থায় ও দুই বছরের কম বয়সের শিশুদের কালোজিরার তেল সেবন করানো উচিত নয়। নকল বা কৃত্রিম কালোজিরার তেল কখনো খাওয়া ঠিক না। জেনে শুনে বুঝে নিশ্চিত হয়ে কালোজিরা বা কালোজিরার তেল সরাসরি বা প্রক্রিয়াজাত করে খেতে হবে। পুরনো কালোজিরা তেল স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
উপসংহার:-
কালোজিরা সরাসরি তেল হিসাবে, কাচা চিবিয়ে, ভেজে পরিমাণ মতো খাওয়া যায়। সরাসরি খাবার থেকে শুরুতে ভাত রুটি বা মুড়ির সাথে কালোজিরা খাওয়াটা অভ্যাস করতে পারলে ভালো। যখনই গরম পানীয় বা চা পান করা হয় তখনই কালোজিরা কোন না কোন ভাবে সাথে খাওয়া ভালো। গরম খাদ্য ভাত খাওয়ার সময় কালোজিরা বেশি উপকারী।
নিউ সেবা বিডি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url